About সূরা হুদ
সূরা হুদ - ১১
১২৩ আয়াত, ১০ রুকু, মক্কী,
(দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে)
ভূমিকা : ১০ থেকে ১৫ নম্বর সূরা সমূহ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। এদের সম্পর্কে ১০ নম্বর সূরার ভূমিকাতে জ্ঞাতব্য বিষয় সমূহ বর্ণনা করা হয়েছে। সেই দিক থেকে ১১ নম্বর সূরাটি ১০ নম্বর সূরার অতিরিক্ত অংশ বিশেষ হিসেবে গণ্য করা যায়। ১০ নম্বর সূরাতে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে মানুষের প্রতি, আল্লাহর দয়া ও করুণার উপরে ; ঠিক সেইভাবে ১১ নম্বর সূরাতে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে আল্লাহর ন্যায় বিচারের উপরে। যখন মানুষ আল্লাহর প্রসারিত দয়া ও করুণার হাতকে গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় তখন আল্লাহর করুণা থেকে সে হয় বঞ্চিত। ফলে অবধারিতভাবে আল্লাহর শাস্তি তার উপরে নেমে আসে।
সার সংক্ষেপ : আল্লাহর প্রত্যাদেশ, আল্লাহর দয়া ও করুণারই স্বাক্ষর। এই আয়াত গুলিতে বর্ণনা করা হয়েছে কিভাবে আল্লাহ্ মানুষের অকৃতজ্ঞতা, মিথ্যার প্রতি ভালবাসা, দম্ভ, অহংকার, কুচক্রপনা প্রভৃতি করুণা ও ধৈর্য্যের সাথে মোকাবেলা করেন। [১১; ১-২৪]
বিধর্মীরা হযরত নূহ এর প্রচারিত আল্লাহ্র প্রত্যাদেশকে ঠাট্টা-বিদ্রুপের বস্তুতে পরিণত করে। হযরত নূহ্ আল্লাহ্র নির্দেশে নৌকা তৈরী করেন এবং আল্লাহ্র করুণায় হযরত নূহ্ মহা প্লাবন থেকে রক্ষা পায়। অপরপক্ষে যারা তাঁর বিরুদ্ধাচারণ করেছিল, তাঁরা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। [১১ ; ২৫-৪৯]
হুদ নবী আদ সম্প্রদায়কে মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করতে নিষেধ করেছেন, সালেহ্ নবী তার সম্প্রদায়কে আল্লাহ্র প্রতীক উটের অসম্মান করতে নিষেধ করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা প্রত্যাখাত হয়েছেন, ফলে প্রত্যাখানকারীরা পৃথিবী থেকে নিঃশেষ হয়ে গেছে [১১;৫০-৬৮]
হযরত লূত তাঁর সম্প্রদায়কে তাঁদের পাপের বিরুদ্ধে সাবধান করে দেয়, কিন্তু তারা তাতে কর্ণপাত করে না। ফলে তারা তাদের পাপের শাস্তি ভোগ করে। প্রতারণা ও জাল জুয়াচুরীর বিরুদ্ধে সুয়েব নবী মিদিয়ানবাসীদের সাবধান করেন, কিন্তু তারা তাকে ভৎর্সনা করে, পরিণামে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। [১১; ৬৯-৯৫]
ফেরাউনের মত উদ্ধত অহংকারী নৃপতি যে তার সম্প্রদায়কে বিপথে চালিত করেছিলো, পরিণাম স্বরূপ নিজের ধ্বংস ডেকে আনে। আল্লাহ্ ন্যায় বিচারক। পাপের শাস্তি হবেই। সুতারাং সব ধরণের মন্দ ও পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং আন্তরিকভাবে আল্লাহ্র সেবা করতে হবে। [১১; ৯৬-১২৩]