About DSLR Tips(টিপস)
মুখে অল্প অল্প হাসি চলে আসছে এই কোর্স এর সম্পর্কে লিখতে গিয়ে। ফটোগ্রাফী নিয়ে সারা বিশ্ব এখন মাতাল, সবার হাতে হাতে ক্যামেরা। স্মার্টফোনে তো সামনে একটা, পেছনে একটা! এই দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে আমাদের সবার হাতেই কিন্তু যন্ত্রখানি পৌঁছে গেছে। আর কোন শিল্পমাধ্যমে মনে হয় প্রযুক্তি এতখানি বিপ্লব আনতে পারেনি, যতটা পেরেছে ফটোগ্রাফীর ক্ষেত্রে। ক্যামেরার এত সহজলভ্যতার পর অনেকেই ভেবেছিলেন (এখনও ভাবেন) ‘এক্সপার্ট’ ফটোগ্রাফারদের দিন বোধহয় শেষ, এই মাধ্যমে প্রফেশনালদেরও প্রয়োজনও আস্তে আস্তে ফুরাবে। কিন্তু ধারনাটা বোধ হয় ভুল। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে, ফটোগ্রাফারদের প্রয়োজন কমেনি, বরং আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এক ফেসবুকেই দেখুন কতজন প্রফেশনাল ওয়েডিং ফটোগ্রাফার এর ফ্যান পেজ, এরা সবাই কিন্তু মোটামুটি নিজেদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ফটোজার্নালিস্ট এবং ফাইন আর্ট ফটোগ্রাফারদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কিন্তু কেন? আমার ধারনা এ্রর একটা বড় কারন দৃ্ষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ফটোগ্রাফীর অবাধ বিস্তার। মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ছবি দেখতে চায়।
একটা উদাহরন দেই। ধরুন আপনার বন্ধুর বিয়েতে (কেন জানি বার বার ওয়েডিং ফটোগ্রাফীর উদাহরণ টানছি) তার ছোটভাই ডিএসএলআর দিয়ে অনেকগুলো ছবি তুললো, কোন পারিশ্রমিক নিলনা। এই ছবিগুলো যখন আপনি একজন প্রফেশনালের অনলাইন পোর্টফোলিওর সাথে তুলনা করবেন, তখন দেখবেন আকাশ পাতাল তফাত। কম্পোজিশান, আলো, শার্পনেস…সবকিছুতে। ঠিক তখনই কিন্তু উপলব্ধি করবেন যে নিজের বিয়েতে একজন প্রফেশনালকেই আনতে হবে!
Image-5
আর একটা উদাহরন। ফার্মগেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। পত্রিকাগুলো নিউজের জন্যে ছবি খুঁজছে। তারা হয়তো ফেসবুকে একটা ঘোষনা দিয়ে দিল যার যার কাছে ছবি আছে সাবমিট করার জন্য। অনেকেই তাদের সেলফোন দিয়ে ছবি তুলে রেখেছিল, সেগুলো সাবমিট করলো। দেখা গেলো সব ছবিই দুর থেকে তোলা শুধুই আগুনের ছবি…স্থান কাল এবং হতাহত সম্পর্কে কোন ধারনা পাওয়া যায়না ছবিগুলো দেখে। বাধ্য হয়ে তারা একজন প্রফেশনাল ফটোজার্নালিস্টের (ধরুন আবির আবদুল্লাহ ভাই, এ্যালেক্সিয়াতে ওনার পোর্টফোলিও দেখুন “এখানে (লিংক)”) শরনাপন্ন হল। কেননা শেষ পর্যন্ত তারা বুঝতে পেরেছে যে ঠিক সময়ে ঠিক যায়গায় উপস্থিত খেকে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে সঠিক ছবিটি একজন ফটোজার্নালিস্টই তুলে আনবেন।
Images-8উদাহরনগুলো দেয়ার কারণ একটাই। আপনাদের আশ্বস্ত করা যে ‘ভাল’ ফটোগ্রাফারের প্রয়োজন আসলে কমেনি, বরং বেড়েছে এবং নিকট ভবিষ্যতেও বাড়বে যদি না অন্য কোন শিল্পমাধ্যম ফটোগ্রাফীকেই রিপ্লেস করে ফেলে। আগে অনেক কম ফটোগ্রাফার ছিলেন, কাজেই ফোকাসটা তাদের দিকে বেশি ছিল। ফটোগ্রাফী শুরু করাটাই ছিল চ্যালেঞ্জের ব্যপার…ফিল্ম, ক্যামেরা, কেমিক্যালস, ডার্করুম। খুব কম মানুষই শুরু করতেন, আর একবার শুরু করলে দৃষ্টি আকর্ষন করাটা একটু হলেও সহজ ছিল, কেননা প্রতিযোগীতা ছিলনা এখনকার মত (ব্যক্তিগত মতামত, ভিন্নমত কে শ্রদ্ধা)। কিন্তু এখন ব্যপারটা উল্টো। শুরুটা সহজ, একটা ক্যামেরা কিনে ফেলুন, বাসায় একটা কম্পিউটার। কিন্তু এরপর শুরু হবে পরিশ্রম। আপনার আশে পাশে অনেকেই ক্যামেরা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছে, আপনাকে তাদের সাথে প্রতিযোগীতায় নামতে হবে যদি প্রফেশনালি শুরু করতে চান। আর যদি নেহাতই শখের বশে শুরু করেন, তাহলে এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর হবেনা…সবার কাছ থেকে শিখবেন এবং শিখবেন খুব দ্রুত। মানুষের সাথে মেশার জন্যে ফটোগ্রাফীর মতো মজার মাধ্যম আর নেই। যদি শেখার সবগুলো ধাপ পার হতে পারেন, এবং লেগে থাকতে পারেন (যেটা সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ), তাহলে আপনার হবেই। নিজের উপর আস্থা রাখুন, নিজের ভাললাগার বিষয়গুলো খুজেঁ বের করুন। প্রকৃতি না পোকামাকড়? মানুষ নাকি বনজঙ্গল? পাহাড় নাকি সাগর? নাকি সবকিছুই? যেই বিষয়ের ছবি তুলতে ভাললাগে, সেই বিষয়ে ‘এক্সপার্ট’ হয়ে উঠুন। আপনাকে আর ঠেকায় কে?